সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্ক: মরণব্যাধি রোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তাঁর ক্যান্সারের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। চিকিৎসার প্রথম ধাপে তাঁকে কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে।
৯ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন গুণী এই শিল্পী। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী এবং সংগীতশিল্পী জাহাঙ্গীর সাঈদ। এন্ড্রু কিশোরের কিডনি ও হরমোনজনিত সমস্যা ছিল। এ কারণে তাঁর ওজন হ্রাসসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া তাঁর এড্রেনাল গ্লান্ড বড় হয়ে গেছে। পাশাপাশি তাঁর আরেকটি সমস্যা হলো জ্বর। প্রতিদিন তাঁর জ্বর আসছে। এসব নিয়ে চিকিৎসকেরা চিন্তিত ছিলেন। কেন এভাবে জ্বর আসছে, তার সমাধান খুঁজছেন চিকিৎসকেরা। এছাড়া তাঁর শরীরের কিছু নমুনা বায়োপসির জন্য পাঠানো হয় ল্যাবে। সে রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হয়েছেন এন্ড্রু কিশোর ক্যান্সারে ভুগছেন।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এন্ড্রু কিশোরকে আমন্ত্রণ জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এ শিল্পীর শারীরিক সমস্যার খোঁজ নেন এবং তাঁর হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন। জানা গেছে, ইতিমধ্যে একটি বেসরকারি চ্যানেলের কর্তৃপক্ষ শিল্পীর চিকিৎসায় সহায়তায় আরও ১০ লাখ টাকা দিয়েছে।
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। মা স্কুল শিক্ষিকা মিনু বাড়ৈ তাঁর প্রিয় শিল্পী কিশোর কুমারের নামের সঙ্গে মিল রেখে সন্তানের নাম রাখলেন। শখের বশে রাখলেও তিনি হয়তো ভাবেননি যে তাঁর এই সন্তানই হবে বাংলা চলচ্চিত্রের গানের ইতিহাসের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী।
রাজশাহীতে কেটেছে এন্ড্রু কিশোরের শৈশব ও কৈশোর। তিনি প্রাথমিকভাবে সংগীত পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। এক সময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে মেইল ট্রেন চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে এন্ড্রু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয়। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এন্ড্রু কিশোরের খুব জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘পদ্মপাতার পানি’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল’।